সাংবাদিকতার অতীত মানদণ্ড হারিয়ে ফেলেছে রয়টার্স : উপ-প্রেসসচিব

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, রয়টার্স তাদের অতীতের সাংবাদিকতার মানদণ্ড হারিয়ে ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাত এই সংবাদ সংস্থাটি এখন আর আগের মতো নির্ভরযোগ্য নয়।’ শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি একথা বলেন।

তাঁর স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য অনুবাদ করে দেওয়া হলো—

‘আমি রয়টার্সে সাত বছর কাজ করেছি, তাই তাদের সম্পাদনা-ধারা ও পেশাদার নীতিমালা সম্পর্কে ভালোভাবেই জানি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক যে একসময় প্রতিষ্ঠানটি সাংবাদিকতার যে উচ্চমান নির্ধারণ করেছিল, সেটা থেকে বিচ্যুত হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ নিয়ে তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে সেটা ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। গত দেড় বছরে বাংলাদেশকে নিয়ে করা প্রতিবেদনে রয়টার্স অন্তত তিনটি গুরুতর ভুল করেছে।

প্রথমত, এক আইনজীবী হত্যাকাণ্ডের খবর প্রকাশে তারা ভুয়া উদ্ধৃতি ব্যবহার করেছিল। নিহত ব্যক্তিকে আটক ইসকন নেতার আইনজীবী হিসেবে দেখানো হয়েছিল যেটা ভুল ছিল। দ্বিতীয়ত, একই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ভিডিওর সঙ্গে উল্লেখিত ঘটনার কোনো সম্পর্কই ছিল না। পরে অবশ্য রয়টার্স তাদের ভুল স্বীকার করে প্রতিবেদনটি সংশোধন করে এবং ভিডিওটি সরিয়ে নেয়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চায়নি যদিও এই বিভ্রান্তিকর তথ্য দাঙ্গা সৃষ্টির মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল।

তৃতীয়ত, প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক মালয়েশিয়া সফর ঘিরে রয়টার্স শুরুতে জানায়–মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ যৌথভাবে মায়ানমারে শান্তিরক্ষা মিশন পাঠাতে সম্মত হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা খবর ছিল। বাংলাদেশ এমন কোনো প্রস্তাব দেয়নি বা তাতে রাজিও হয়নি। বিষয়টি কেবল মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের পক্ষ থেকে এসেছিল। ঘটনাটি কুয়ালালামপুরের হলেও প্রতিবেদনটি ঢাকা থেকে করা হয়েছিল।

আমি মোটেই বিশ্বাস করি না যে, রয়টার্সের কুয়ালালামপুরে কোনো সংবাদদাতা বা স্ট্রিংগার নেই। আমরা বিষয়টি রয়টার্সের সম্পাদকদের জানালে তারা চুপিসারে খবরটি সংশোধন করে, কিন্তু এর জন্য কোনো ব্যাখ্যা বা দুঃখপ্রকাশ করেনি।

এমন ধারাবাহিক ভুল দেখে আমি বিশ্বাস করতে শুরু করেছি যে— রয়টার্স আর আগের মতো সাংবাদিকতার আদর্শ বহন করছে না। তাই তাদের যেকোনো প্রতিবেদন, বিশেষ করে যেগুলো শুধু ইমেইল সূত্রে তৈরি এবং যেখানে কোনো রিয়েল-টাইম ছবি নেই, তা এখন সন্দেহের চোখে দেখা উচিত।’

ফোকাস বাংলা নিউজ/ এসকে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *