নিজস্ব প্রতিনিধি, মাটি ও মানুষ: আজ ১৭ আগস্ট। ১৫ বছর আগে সারা দেশে একযোগে বোমা হামলা চালিয়ে ‘জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের’ (জেএমবি) জঙ্গিরা প্রকাশ্যে আসে।
এরপর তারা অনেক হামলা চালিয়ে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে। পরে এই দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানি, আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হাসান আল মামুনসহ শীর্ষ জঙ্গিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়।
তবে এতে দমে যায়নি জঙ্গিরা। তারা ‘নব্য জেএমবি’ নাম দিয়ে আবারও মাঠে নামে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারির কারণে তারা সুবিধা করতে পারেনি। যদিও একেবারে থেমে যায়নি। মাঝে মাঝেই ছোটখাটো বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মানুষকে ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে। পুলিশসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তারা এখনো দেশে শরিয়াহ আইন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে ।
আগস্ট সামনে রেখে গত ২৬ জুলাই রাতে ঢাকার পল্টনে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের পাশে জঙ্গিরা এক সার্জেন্টের মোটরসাইকেলে বোমাসদৃশ বস্তু রেখে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। এর এক দিন আগে ২৫ জুলাই প্রায় একই সময়ে পল্টন মোড়ে কে বা কারা একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। ওই ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা হয়। ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে গত ১১ আগস্ট সিলেটে নব্য জেএমবির পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি (কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম)। এই জঙ্গিদের হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল বলে পুলিশ সূত্র জানায়। এসব বিষয়কে আগস্ট মাস সামনে রেখে ভয় দেখানো হিসেবেই দেখছে পুলিশ।
জঙ্গিদের বর্তমান অবস্থার বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও সিটিটিসির প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম গতকাল বিকেলে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘১৫ই আগস্ট জাতির জনককে হত্যা করা হয়েছে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করা হয়েছে, ১৭ আগস্ট জঙ্গিরা সারা দেশে একযোগে বোমা হামলা চালিয়েছে। এসব কারণে আগস্ট মাস এলে জঙ্গিরা অনুপ্রেরণা পায়। আগস্ট মাসে তাদের প্রতি আমাদের বাড়তি নজরদারি থাকে। যদিও তারা আর আগের মতো শক্তিশালী নেই।’
সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় সারা দেশে ১৬১টি মামলা হয়। ১২৮টি মামলার রায় হয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে ৩২০ জনকে। এখনো বিচারাধীন ৫৫টি মামলা। ওই ঘটনায় নিষ্পত্তি করা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ৭৪ জঙ্গি জামিন পাওয়ার পর এখনো পলাতক।